বোধের পাষাণ

নাসির আহমেদ কাবুল


তুমি চাইলেই তো আর নীল শাড়ি লাল হবে না;

কাকডাকা ভোরে শিশিরে রঙিন হবে না দুই পা।

মধ্যরাতে ঝুলবারান্দায় উঁকি দেবে না

ফাল্গুনীর চাঁদ;

তবুও চাইতেই পারোÑচাওয়া আর না পাওয়ার

আক্ষেপের নামই তো জীবন।

 

তখনও তোমার আঁচল ঢাকেনি বুকের পলিশ,

তখনও ঠোঁটে লাগেনি কৃত্রিম অনুরাগ,

তখনও চোখ কাঁপেনি গলিত লজ্জায়,

স্থির জলে অস্থির ঢেউ অদেখা তখনও...

আমি তখন তোমাকেই ভালোবাসার জলে

গলাতে চেয়েছিলামÑবোধের পাষাণ।

 

তুমি সাড়া দাওনি বলে

সকালের শিশির শুকিয়েছিল অবহেলার দহনে,

মধ্য—দুপুরে পানকৌড়ির ডুবসাঁতার থেমে

গিয়েছিল অভিমানে!

আর এক অভিমানী বালক ঘুড়ির সবটুকু সুতো ছেড়ে দিয়ে

হাত—পা ছড়িয়ে আকাশপানে তাকিয়ে

তোমাকে খুঁজতে—খুঁজতে, খুঁজতে—খুঁজতে হারিয়ে গিয়েছিল

অন্য এক জগতে!

 

তারপর তার চোখ নিমীলিত হলো

চুলগুলোয় পদ্মার ঢেউ হয়ে আছড়ে পড়ল

বিশুষ্ক ঠোঁট কেঁপে—কেঁপে উঠল

অর্ফিয়াসের বাঁশি বেজে উঠল আপন ধ্যানে।

তখন বালক—কবির দিগন্ত চৌচির করা চিৎকারে

তোমাকেই চেয়েছিল—তুমি সাড়া দাওনি!

 

আমাদের চাওয়া আর পাওয়ার যোগফল

মেলে না কোনোকালে,

তবু চাইতেই পারো

আবারও তোমার মেঘ—বিষণ্ণ শাড়িতে লাগুক বাসন্তী আগুন।

আমিও না হয় দ্বিগুণ উৎসাহ নিয়ে চাইব তোমাকে

আরও একবার!

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url