সেই বাসন্তী রং শাড়িটা

নাসির আহমেদ কাবুল

 

এখনো কি আছে তোমার সেই শাড়িখানি--

বাসন্তী রং হলুদ পাড়ের।

এখনও কি আগের মতো খয়ের রঙের টিপ পরে

ঘুরে বেড়াও উদাস মনে শেষ বিকেলে--

জানতে খুব ইচ্ছে করে!

মনে পড়ে খুব যখন সংসার—সমাজ থেকে

বিচ্ছিন্ন হই আপন ধ্যানে।

 

মনে কি মনে পড়ে, কেমন করে স্বল্প—বেতনে

খুব কষ্ট করে টাকা জমাতাম;

এ—দোকান, সে—দোকান ঘুরে—ঘুরে কিনেছিলাম

আটশত পঞ্চাশ টাকার বাসন্তী শাড়ি!

সে মাসে আলুভর্তা আর ডাল ছাড়া অন্যকোনো

ব্যঞ্জন জোটেনি আমার!

তবুও এক রাজ্যের প্রশান্তিতে আচ্ছন্ন হয়ে নীল প্যাকেটে

উপহার পেঁৗছে দিয়েছিলাম সেই শাড়ি।

সেদিন ফাল্গুনীরাতে নির্ঘুম কাটিয়েছিলাম--

চাঁদের অলিন্দে তোমার ছায়া দেখেছিলাম সেই রাতে।

 

শাড়িখানি কি এখনও আছে, নাকি--

হাঁড়িপাতিলওয়ালার কাছ থেকে কড়াই কিংবা পাতিল কিনে

পুরানো জঞ্জাল সরাতে পেরে খুশি হয়েছ খুব!

আপদ গেছে বলে স্বস্তির নিঃশ্বাস ছেড়েছ তুমি?

পুরানো জংধরা স্মৃতির পাতা ছিঁড়ে ফেলে রাজহংসীর মতো

গ্রীবা উঁচিয়ে গুনগুন করেছ আপন খেয়ালে!

 

একদিনও কি পরোনি সেই শাড়ি, কিংবা

পরেছ অন্য কারও জন্য?

সেই মোহনক্ষণে তোমার মুগ্ধ বাতায়নে ডানাভাঙা

কোনো পাখি কি একবারও ডেকে ওঠেনি

বউ কথা কও বলে?

আড়াল থেকে পাখির আর্তনাদের সঙ্গে

তোমার বুকভাঙা দীর্ঘশ্বাসের কোরাস শুনেছি।

এতটুকুতেই বিজয়ী আমি, তুমি হেরে গেছ

স্বর্ণপ্রাসাদে ঘুমের ঘোরে! 
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url