জীবনের চোরাগলি

নাসির আহমেদ কাবুল

 

বৃষ্টি নামুক কিংবা খরতাপে পুড়ে যাক

এই শহর, আমি একটুও মন খারাপ করব না,

কথা দিলাম কাউকে এতটুকু দোষ দেবো না,

নিজেকেই পোড়াব নরক অনলে।

 

কে—বা কার হাত ধরে, কে—বা বাঁশিতে বসন্ত সুরে

স্বপ্নের রাজহাঁস হয়ে কারও গর্বিত গ্রীবায়

নীলপদ্ম হয়ে ফোটে! কিবা যায়—আসে,

আমি লোকান্তরিত যাযাবর—আত্মভোলা,

আমাকে কে—বা মনে রাখে বিভ্রান্ত জনপদে!

 

এই লোকালয়, এই মাঠঘাট, ঝিলের জলে

কলমি—হেলেঞ্চার সুখ—স্বপ্নের কিশোর আজ যে অতীত!

কৈশোর ডাকে না তারে আয়, আয়—রে ঘুড়ি লাটাই নিয়ে;

আয়রে আবার হারিয়ে যাই কলার ভেলায় করে শাপলা বিলে,

ঝুম—ঝুম বৃষ্টিঝরা দুপুরে।

 

কমরেড নবযুগ আনবে না’ বলে যৌবন ঝাঁপিয়ে পড়ে না মিছিলে!

মিছিলের মুখগুলো বিবর্ণ সময়ের ইতিহাস;

সংসার নামের চাকায় পিষ্ট হয় বিপ্লব।

কেবা মনে রাখে তারে, ধ্বংসস্তূপের গভীরে চাপা পড়ে আছে

রোদেলা সকাল যার!

 

এখন বারবেলায় কেউ নেই, চারদিকে অন্ধকার ভীষণ,

সুনসান নীরবতা!

ভৈরবী নৃত্যে পাথর হৃৎপিণ্ড নেচে ওঠে;

একটি—দুটি মুখ তবু ভেসে ওঠে আজও।

তাদের চোখ থেকে এখন উপচে পড়ে ভিসুভিয়াসের গলিত লাভা।

 

পোড়খাওয়া ঝিমিয়ে পড়া অশান্ত হৃদয় আবার উন্মাতাল পদ্মার উচ্ছ্বাসে!

একেই বুঝি জীবন বলে—সংগ্রাম আর সংকট যার নাম!
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url