বিসর্জনের কৈফিয়ত

 নাসির আহমেদ কাবুল

আমরা একদিন পৌষের জোছনা মেখে পাশাপাশি হেঁটেছিলাম

খুব কাছাকাছি অন্ধকারে শীতের বাতাসে হাত ধরাধরি করে।

সেদিন দুজনে দুলেছিনু বনে’ কবিগুরুর গানটিও গেয়েছিলাম—

পিলু রাগে আটমাত্রা কাহারবায়।

ব্যাংকক থেকে পিনং যাওয়ার পথে কবি লিখেছিলেন।

আমরাও ‘চলতি হাওয়ার পন্থী’ হয়েই গেয়েছিলাম গানটি।

মনে নেই তোমার? হয়তো নেই—

কী জানি হয়তো এখন আর আমাকে তোমার মনেই পড়ে না!

 

তোমাকে আমার মনে পড়েÑসব সময়Ñপ্রতিদিনই,

যখন জোছনা—ধোয়া কোনো পৌষালি রাত ফিরে আসে,

একলা থাকি যখন নির্জনে, অথবা জনারণ্যে;

তোমার দুই চোখ দুই হাতÑদিঘল কালো চুল

ললাট, চলার ছন্দÑসবই মনে পড়ে;

যখন ভুল করে তিরিশ বছর আগের দিনে ফিরে যাই

তখন তোমাকেই মনে পড়ে।

 

আমি সহজে ভুলি না কিছু।

সেদিনই তুমি প্রথম শাড়ি পরেছিলে, লাল রং হল্দে পাড়ের,

হাঁটতে হাঁটতে বারবার হেঁাচট খাচ্ছিলে তুমি,

শাড়ি জড়িয়ে যাচ্ছিল বলে।

একবার পড়েও গিয়েছিলেÑআমি হাত ধরে টেনে তুলেছিলাম

সেই তো প্রথম স্পর্শ তোমাকেÑএসব তুমি মনে রাখোনি!

 

এখন তোমার মুুগ্ধ বাতায়নে রোদেলা সকাল খেলা করে,

ফুলে—ফলে অপরূপা তুমি!

এতটুকু সুখী দেখতেই তো বিসর্জন দিয়েছিলাম

বুকে দগদগে ঘা নিয়েÑআজও শুকায়নি যা!

 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url